আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা আপনার এবং আপনার মোবাইল ডিভাইসটিকে হ্যাকিং থেকে রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আপনি ব্যক্তিগত তথ্য এবং ডিভাইস সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেন।
Table of Contents
ব্যক্তিগত তথ্য এবং ডিভাইস সুরক্ষা
আপনার মোবাইলের সফ্টওয়্যার আপ টু ডেট রাখুন :
নিয়মিতভাবে আপনার ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেম আপডেট এবং ব্যবহার্য্য সকল এপস আপডেট করুন, কারণ এই আপডেটগুলিতে প্রায়শই নিরাপত্তা প্যাচ থাকে যা দুর্বলতার সমাধান করে৷
শক্তিশালী এবং ইউনিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন :
আপনার ডিভাইস সুরক্ষিত করতে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড, পিন বা প্যাটার্ন লক সেট করুন। সাধারণ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন এবং জটিল অথচ সহজে মনে রাখা যায় এমন পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। পাসওয়ার্ড তৈরি করতে এবং সেভ করে রাখতে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করতে পারেন।
সেকেন্ড ফেক্টর এনেবল করুন (2FA) :
যখনই সম্ভব 2FA এনেবল করুন, বিশেষ করে আপনার গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্ট এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলির জন্য এটি খুবই দরকার। এটি আপনার ডিভাইসে নিরাপত্তার একটি অতিরিক্ত স্তর যোগ করে।
অ্যাপ ডাউনলোডের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন :
শুধুমাত্র অফিসিয়াল অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করুন। এপস ইনস্টল করার আগে ব্যবহারকারীর রিভিউগুলো পড়ুন এবং এটি ইনস্টল করার আগে অ্যাপটি আপনার ডিভাইসে কোন ধরনের পারমিশন চায় সেটা পরীক্ষা করুন৷ ক্র্যাক এপস কিংবা কারো দেয়া এপস ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকুন।
এন্টিভাইরাস ইনস্টল করুন :
একটি স্বনামধন্য মোবাইল এন্টিভাইরাস অ্যাপ ইনস্টল করুন যেটাতে ম্যালওয়্যার স্ক্যানিং, অ্যান্টি-ফিশিং সুরক্ষা এবং অ্যাপের পারমিশন পর্যবেক্ষণের মতো অপশন থাকে। মনে রাখবেন, অপরিচিত বা সল্প পরিচিত এন্টিভাইরাসগুলো আপনার মোবাইলকে আরও স্লো করে দিবে এবং হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিবে।
পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহারে সতর্ক থাকুন :
অসুরক্ষিত পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। আপনার যদি পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে হয়, তাহলে আপনার ইন্টারনেট সংযোগ এনক্রিপ্ট করতে একটি VPN (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) ব্যবহার করুন।
অ্যাপের পারমিশন চেক করুন :
কিছু অ্যাপ আপনার গোপনীয়তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে তাদের আসলে প্রয়োজন নেই এমন ডেটাতে এক্সেস পারমিশন নিয়ে থাকতে পারে। আপনার অ্যাপগুলিকে দেওয়া পারমিশনগুলি পর্যায়ক্রমে চেক করুন এবং যে কোনও অপ্রয়োজনীয় বা অতিরিক্ত পারমিশন রিমুভ করুন৷ এতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং ডিভাইস সুরক্ষা বাড়বে।
ফিশিং প্রচেষ্টা থেকে সতর্ক থাকুন :
সংবেদনশীল তথ্য জানতে চেয়ে করা ইমেল,মেসেজ (বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখ, ব্যাংক একাউন্ট ইত্যাদি) থেকে সতর্ক থাকুন। অপরিচিত কিংবা আপনি শত্রু ভাবেন এমন কারো দেওয়া লিংকে ক্লিক করবেন না। এই ক্লিকের ফলে আপনার একাউন্ট হ্যাক হয়ে যেতে পারে।
নিয়মিত আপনার ডেটা ব্যাক আপ করুন :
আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডেটার নিয়মিত ব্যাকআপ রাখুন। আপনার ছবি, হোয়াটসএপ চ্যাট, ডকুমেন্টস গুগল ড্রাইভ/ড্রপ বক্স/ওয়ানড্রাইভের মতো নিরাপদ স্থানে অটো আপলোড অপশন এনেবল করে রাখুন। এতে আপনার ডিভাইস হ্যাক হলে অথবা নষ্ট হলে আপনার ডেটা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।
ডিভাইস এনক্রিপশন ব্যবহার করুন :
আপনার ডেটা ভুল হাতে পড়লে তা রক্ষা করতে আপনার ডিভাইসে এনক্রিপশন এনেবল করুন। এটি আপনার ডিভাইসে সংরক্ষিত ডেটা এনক্রিপ্ট করে এবং ডিক্রিপশন কী ছাড়াই এটি কেউ পড়তে/দেখতে পাবে না। এতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং ডিভাইস সুরক্ষা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
রিমোট ট্র্যাকিং এবং ইরেজ এনেবল করুন :
আপনার ডিভাইসটি হারিয়ে বা চুরি হয়ে গেলে ডেটা মুছে ফেলার জন্য Find My Device (Android) বা Find My iPhone (iOS)এনেবল করুন৷ এতে আপনার মোবাইল হারিয়ে গেলে আপনার ব্যক্তিগত ডাটা কারো হাতে যাওয়ার আগেই আপনি অন্য ডিভাইস থেকে গুগলে Find My Device বা এপলের Find My iPhone সুবিধা ব্যবহার করে আপনার ডাটা মুছে ফেলতে পারবেন। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং ডিভাইস সুরক্ষা বৃদ্ধির এটা লাস্ট স্টেপ।
এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে আপনি ব্যক্তিগত তথ্য এবং ডিভাইস সুরক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারেন এবং হ্যাকিং বা অননুমোদিত অ্যাক্সেসের ঝুঁকি কমাতে পারেন।