অনলাইনে ডিজিটাল পাসপোর্ট বা ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২২ নিয়ে এই পোস্ট। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট চালু করেছে। ইতোমধ্যে প্রায় সকল জেলাতেই দেয়া হচ্ছে।
আপনি নিজেই দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন যদি আপনার একটি ফোন বা কম্পিউটার থাকে। এখানে আমি অনলাইনে ই পাসপোর্ট ফরম (Bangladesh Passport Online Form) পূরন কিভাবে করবেন ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য আপনাদের জানাব। আশা করি আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন এখানে।
ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগবে
Are you searching for an e-passport fee in Bangladesh or an e-passport bd price? Here is the full list of e-passport fees with 15% vat included.
পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা, মেয়াদ ও ডেলিভারীর ধরণ অনুসারে ফি’র পরিমাণ ভিন্ন হয়ে থাকে।
ই পাসপোর্ট ফি কত ২০২২ / ই-পাসপোর্ট ফি এর পরিমান
ডেলিভারী | 48 Pages | 48 Pages | 64 Pages | 64 Pages |
---|---|---|---|---|
5 Years | 10 Years | 5 Years | 10 Years | 5 Years |
রেগুলার | ৪,০২৫ টাঃ | ৫,৭৫০ টাঃ | ৬,৩২৫ টা | ৮,০৫০ টা |
এক্সপ্রেস | ৬,৩২৫ টাঃ | ৮,০৫০ টাঃ | ৮,৬২৫ টা | ১০,৩৫০ টা |
সুপার এক্সপ্রেস | ৮,৬২৫ টাঃ | ১০,৩৫০ টাঃ | ১২,০৭৫ টা | ১৩,৮০০ টা |
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
- উপরোক্ত সকল ফি’র মধ্যে ১৫% ভ্যাট অর্ন্তভূক্ত আছে
- সরকারি চাকরিজীবিদের যাদের NOC আছে বা অবসর সনদ আছে, তারা রেগুলার ফি দিয়ে জরুরী সুবিধা পাবেন। সরকারী চাকরীজীবিদের জন্য জরুরী আবেদন প্রযোজ্য নয়।
ই-পাসপোর্ট ফি নিয়ে কিছু সচরাচর প্রশ্ন
ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগবে?
ই-পাসপোর্টের মেয়াদ, পাতার সংখ্যা ও ডেলিভারী সময়ের উপর নির্ভর করে ফি ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণ আবেদনে ৫ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট ফি ৪০২৫ টাকা।
ঘরে বসে কিভাবে ই-পাসপোর্ট ফি জমা দেব?
“এ-চালান” সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই, বিকাশ, রকেট, সোনালী ব্যাংক সহ অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে আপনার ই-পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ব্যাংকে ভিজিট করতে হবেনা। দেখুন কিভাবে নিজেই ই-পাসপোর্ট ফি জমা করবেন
ঘরে বসে অনলাইনে এ চালান পরিশোধ করার নিয়ম
আজ জানাব, স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি বা অটোমেটেড চালান সিস্টেম বা এ চালান কী (A Challan bd – Automated Challan System), এ চালানের সুবিধা, ঘরে বসে অনলাইনে এ চালান পরিশোধ করার নিয়ম ও বিস্তারিত।
এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা
এ চালান কি
বিভিন্ন ধরনের সরকারি সেবার ফি অনলাইনে জমা দিতে চালু হয়েছে অটোমেটেড বা স্বয়ংক্রিয় চালান সিস্টেম (এ-চালান পদ্ধতি)। এখন থেকে বিভিন্ন ধরনের সরকারি সেবার ফি এ চালানের মাধ্যমে অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পাসপোর্ট ফি, ট্যাক্স, ভ্যাট এর জন্য এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সরকারের সকল মন্ত্রণালয় বা সংস্থার সরকারি ফি আদায়ের জন্য এ চালান ব্যবহার করা হবে।
পূর্বে ব্যাংক কাউন্টারে লাইনে অপেক্ষা করে চালান জমা দেয়া হত। এটা ছিল নাগরিকদের সময়ের অপচয়। তাছাড়া পূর্বের চালানে আমানতকারীর সঠিক পরিচয় দিয়ে লেনদেন সংরক্ষণ করা হতনা। ফলে, সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থায় যাচাই এবং স্বয়ংক্রিয় করার ব্যপারটি কঠিন হয়ে পড়ে।
এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের অর্থ বিভাগ স্বয়ংক্রিয় চালান সিস্টেম (এ চালান) শুরু করেছে এখন, একজন নাগরিক অনলাইন থেকে এ-চালানের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি ফি যেমন ভ্যাট, কর, পাসপোর্ট ও অন্যান্য ফি অটোমেটেড চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারেন। এজন্য তাকে ব্যাংক কাউন্টারের দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হবে না।
অনলাইনে এ চালান পরিশোধ করার নিয়ম | Pay A Challan Online
বর্তমানে, আপনি শুধুমাত্র অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং রকেট ও বিকাশের মাধ্যমে অনলাইনে এ চালান পেমেন্ট করতে পারবেন।
এছাড়া সোনালী ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে, যে কোন ব্যাংকের ভিসা কার্ড দিয়ে এ চালান পরিশোধ করতে পারবেন।
অনলাইনে এ চালান পেমেন্ট করার মাধ্যমসমূহ:
- সোনালী ব্যাংক/ ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট
- যেকোন ব্যাংকের ভিসা কার্ড
- ডিবিবিএল নেক্সাস কার্ড – DBBL Nexus Card
- মোবাইল ব্যাংকিং- রকেট ও বিকাশ
এ চালান লেনদেনের সময়
বর্তমানে, এ চালান লেনদেনের সময় সকাল 10 টা থেকে বিকেল 4 টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে কারণ সিস্টেমটি খুবই নতুন। কিন্তু শীঘ্রই এটি 24/7 পাওয়া যাবে।
অনলাইনে এ চালানের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার নিয়ম
এখানে আমি একটি পাসপোর্টের জন্য এ চালান পেমেন্ট করে দেখাবো। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
ধাপ ১: অনলাইনে এ চালান পেমেন্ট করার জন্য Automated Challan System Bangladesh (A Challan) সিস্টেমে ভিজিট করুন এখান থেকে।


ধাপ ২: পাসপোর্ট অপশন থেকে ই পাসপোর্ট ফি সিলেক্ট করুন। তারপর আপনার সামনে নিচের মত একটি উইন্ডো ওপেন হবে।
ধাপ ৩: এখান থেকে পাসপোর্টের ধরণ, মেয়াদ ও ডেলিভারীর ধরণ বাছাই করুন। স্বয়ংক্রীয়ভাবে টাকার পরিমাণ ও ভ্যাটসহ মোট টাকার পরিমাণ দেখাবে। নিচ থেকে OK বাটন ক্লিক করুন।
ধাপ ৪: এবার যে ব্যক্তির পক্ষ থেকে এ চালান পরিশোধ করা হবে, তার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নম্বর সনাক্তকরণ নম্বর হিসেবে দিতে হবে।
মনে রাখবেন, যদি জাতীয় পরিচয়পত্র দ্বারা পাসপোর্টের আবেদন করা হয় অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিবেন। আর যাদের বয়স ২০ বছরের কম, জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিবেন।
অর্থ পরিশোধের বিবরণ থেকে পেমেন্ট অপশন – অনলাইন ব্যাংকিং বাছাই করুন (2 নং চিহ্নিত)।
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট, যেকোন ব্যাংকের ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড, অথবা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে চাইলে ব্যাংক অপশনে SONALI BANK LTD গেটওয়ে সিলেক্ট করুন।
তারপর মোট টাকার পরিমাণ লিখে Add বাটনে ক্লিক করুন। এখানে সর্বমোট প্রদেয় টাকার পরিমাণ দেখাবে।
ধাপ ৫: এখন Save বাটনে ক্লিক করুন। আপনাকে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়েতে নেয়া হবে।
ধাপ ৬: এখান থেকে Account অথবা Visa/ Master Card/ Amex Card অথবা Mobile Banking অপশন সিলেক্ট করে পেমেন্ট করুন।
চালান কপি প্রিন্ট করতে না পারলে, চালান নম্বর দিয়ে এ চালান ভেরিফিকেশন ওয়েবসাইট থেকে প্রিন্ট নিতে পারবেন।
যদি চালান নম্বর নিতে পারেন, সেই ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়ের ফেইসবুক সাপোর্ট গ্রুপ SPG Support Group – যোগাযোগ করলে আপনার চালান নম্বর ও পেমেন্ট স্লিপ সংগ্রহ করতে পারবেন।
বিকাশের মাধ্যমে এ চালান পরিশোধ করার নিয়ম
যেহেতু বিকাশ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, হতে পারে আপনার ও বিকাশ একাউন্ট রয়েছে। আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকেই পাসপোর্ট ফি সহ অন্যান্য সরকারি ফি এ চালানের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন।
বিকাশের মাধ্যমে এ চালান জমা দেয়ার জন্য, পূর্বের মত একইভাবে ৫ নং অপশন (অর্থ পরিশোধের বিবরণ) থেকে অনলাইন ব্যাংকিং সিলেক্ট করবেন। ব্যাংক অপশন থেকে, SONALI BANK LTD সিলেক্ট করুন।

এখন Save বাটনে ক্লিক করুন। আপনাকে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়েতে নেয়া হবে। এখানে Mobile Banking বাটনে ক্লিক করে পেমেন্ট করুন।
বিকাশ লোগোতে ক্লিক করুন
এখানে, Pay with bKash বাটনে ক্লিক করুন। বিকাশের পেমেন্ট অপশন আসলে, আপনার মোবাইল নম্বর দিন। তারপর আপনার বিকাশ মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে।
ভেরিফিকেশন কোড ও আপনার বিকাশের পিন দিয়ে পেমেন্ট করুন।
* সাবধানতা- অনলাইনে পেমেন্ট করার সময় সাবধান থাকবেন যেন আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইস বন্ধ বা ইন্টারনেট কানেকশন যেন বিচ্ছিন্ন না হয়।
পেমেন্ট করার সময় যদি আপনার ডিভাইস বন্ধ বা ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়, আপনার টাকা কর্তন হলেও চালানের প্রিন্ট কপি নাও পেতে পারেন। এমন সমস্যা হলে, সোনালী ব্যাংকের ফেইসবুক সাপোর্ট গ্রুপ SPG Support Group – যোগাযোগ করলে আপনার চালান নম্বর ও পেমেন্ট স্লিপ সংগ্রহ করতে পারবেন।
রকেটের মাধ্যমে এ-চালান পরিশোধ করার নিয়ম
রকেট থেকে এ চালান জমা দেয়ার জন্য সব কিছু আগের মতই থাকবে, শুধুমাত্র ৫ নং- অর্থ পরিশোধের বিবরণ থেকে , মোবাইল ব্যাংকিং ও রকেট সিলেক্ট করুন। নিচের ছবিতে খেয়াল করুন।
এখন Save বাটনে ক্লিক করুন। আপনাকে Dutch Bangla Bank Rocket এর পেমেন্ট গেটওয়েতে নেয়া হবে। নিচের ছবিতে দেখুন কিভাবে রকেট থেকে এ চালান জমা দিবেন।
আপনার রকেট একাউন্ট নম্বরটি লিখুন (আপনার মোবাইল নম্বর ১১ ডিজিট + একাউন্ট ডিজিট ১ ডিজিট = একাউন্ট ১২ ডিজিট)।
তারপর আপনার রকেট একাউন্টের ৪ ডিজিটের পিন নম্বরটি লিখুন এবং SUBMIT বাটনে ক্লিক করে চালানের টাকা পরিশোধ করুন।
* সাবধানতা- টাকা পরিশোধের সময় সাবধান থাকবেন যেন আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইস বন্ধ বা ইন্টারনেট কানেকশন যেন বিচ্ছিন্ন না হয়।
কিভাবে এ চালান যাচাই ও প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করবেন – A Challan Check or Verify
এ চালান যাচাই করার জন্য, ই চালান ভেরিফিকেশন সাইটে গিয়ে চালান নম্বর দিয়ে যাচাই করেন। তাছাড়া যদি আপনি চালানের প্রিন্ট কপি নিতে না পারেন, চিন্তার কোন কারণ নেই। চালান নম্বর দিয়ে Automated Challan Verification পেইজ থেকে আপনার এ চালানের প্রিন্ট কপি নিতে পারবেন।